ঘুমঘোরে নাক ডাকা অনেকে প্রশান্তি মনে করেন, তবে এটা প্রশান্তি নয়, রোগ | নাম-স্লিপ অ্যাপনিয়া। তবে সব নাক ডাকা স্লিপ অ্যাপনিয়া নয়, যদি ঘুমের সময় ১০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় নিঃশ্বাস সম্পূর্ণ বা আংশিক বন্ধ থাকে এবং এ কারণে দেহের অক্সিজেন শতকরা তিন ভাগের বেশি কমে যায়, তাকে বলে Sleep Apnea । অনেকে এটা বোবা ধরা বলে মনে করেন। শ্বাসনালির মাংসপেশি ঘুমের সময় আংশিক অবশ হয়ে পড়ায় শ্বাসনালি সংকুচিত হয়। শারীরিক স্থূলতা, মুখ ও করোটির গঠনগত ত্রুটির কারণে শ্বাসনালির সংকোচন আরও বাড়ে। ফলে নাক ডাকে। অনেক সময় মস্তিষ্ক শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে জড়িত মাংসপেশি কাজ করার জন্য নির্দেশ দেওয়ার কথা থাকলেও তা করে না। ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়।
লক্ষণ : ঘুম যত গভীর হয়, নাক ডাকা তত বাড়ে। একপর্যায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। কেউ কেউ আচমকা ঘুম থেকে জেগে শ্বাস নেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেন; মৃত্যুভয়ে ভীত হয়ে পড়েন। অনেকের মুখ ও গলা শুকিয়ে যায়, ঘুম থেকে জেগে পানি খেতে হয়। আক্রান্তরা যতক্ষণ ঘুমান, ওঠার পর মাথা ভারী লাগে, শরীর ম্যাজম্যাজ করে, ঝিমুনি ভাব থাকে, কাজে মন বসে না, স্মৃতিশক্তি কমে যায়, মেজাজ খিটখিটে হয়। কমে যৌনক্ষমতাও।
ক্ষতিকর দিক : উচ্চ রক্তচাপের যে কারণগুলো জানা গেছে, Sleep Apnea তার অন্যতম। এ রোগে আক্রান্তদের স্ট্রোক, হৃদরোগ, যেমন- করোনারি আর্টারি ডিজিজ বা হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলিউর, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। দীর্ঘদিন চিকিৎসা না করালে পালমোনারি হাইপার টেনশন হয়ে হার্ট ফেইলিউর হতে পারে।
চিকিৎসা : এ রোগের চিকিৎসা করালে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে। কাজেই রোগ পুষিয়ে না রেখে বা ‘নাক ডাকা কোনো রোগ নয়’ ভেবে বসে থেকে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসা নিন।
স্লিপ অ্যাপনিয়া বা নাক ডাকার সমস্যাকে অবহেলা করা বোকামি। তাই আপনার নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, প্রয়োজনে ঘুমের সময় Auto CPAP ব্যবহার করুন |